আজকের পোস্টের বিষয়টা হলো জানা-অজানাকে জানা। আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমরা নেটওয়ার্ক সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতি সম্পর্কে জানবো। যেমন ধরেন, যন্ত্রটার নাম কি? এটার কাজ কি? এটা কিভাবে কাজ করে। নেটওয়ার্ক সংশ্লিষ্ট কয়েকটি যন্ত্র হলো - হাব, সুইচ, রাউটার, মডেম ও ল্যান কার্ড। তো চলুন বেশী কথা না বলে পোস্টের মূল বিষয়ের দিকে আসা যাক। আগে বলে রাখি আমি এই পোস্টের তথ্যগুলো অন্য সাইট থেকে সংগ্রহ করেছি।

হাব (HUB) :
সাধারণত তারযুক্ত নেটওয়ার্কে থাকা অনেকগুলো আইসিটি যন্ত্র তথা কম্পিউটার, পিন্টার ইত্যাদিকে একসাথে যুক্ত করতে হাব ব্যবহার করা হয়। হাব এক যন্ত্র কে অন্য যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ করে দেয়। বলা যায়, একই নেটওয়ার্কে হাব দ্বারা সংযুক্ত সকল কম্পিউটার একটি আরেক টির সাথে যোগাযোগ করতে পারে। হাব বললেই আমরা ইন্টাটনেট হাব বা নেটওয়ার্ক হাবকেই বুঝে থাকি। তবে ইদানীং আমরা অনেক USB হাব ও দেখে থাকি।

হাবের মধ্যে দিয়ে যখন তথ্য বা উপাত্ত এক যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে যায়, হাব তখন সেগুলোকে পড়তে পারেনা। এক কম্পিউটার থেকে অন্য একটি কম্পিউটারে তথ্য বা উপাত্ত পাঠালে হাব তার সাথে সংযুক্ত সকল কম্পিউটারে ঐ তথ্য বা উপাত্ত পাঠিয়ে দেয়। এমন কি যে কম্পিউটার থেকে তথ্য পাঠানো হলো, তাকেও হাব আবার ঐ তথ্য পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ হাব নির্দিষ্ট ঠিকানা অনুযায়ী তথ্য পাঠাতে পারেনা। বর্তমানে কম গতি ও বেশি সুবিধা পাওয়া যায় না বলে হাবের ব্যবহার অনেক কমে গেছে।

সুইচ (Switch) :
এটিও হাবের মতো একটি ক্ষুদ্র আইসিটি যন্ত্র। বর্তমানে যেকোনো নেটওয়ার্ক তৈরি করতে বেশিরভাগ সময় সুইচ ব্যবহার করা হয়। হাবের সাথে সুইচের প্রধান পার্থক্য হলো সুইচ তারের সাথে সংযুক্ত প্রত্যেকটি আইসিটি যন্ত্র কে পৃথকভাবে শনাক্ত করতে পারে কিন্তু হাব তা পারেনা। ফলে সুইচ দিয়ে তৈরি নেটওয়ার্কের যেকোনো আইসিটি যন্ত্র (Node) সরাসরি অন্য যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। সুইচের সাথে সংযুক্ত যন্ত্রগুলো শুধু যাকে ডেটা বা উপাত্ত পাঠাতে চায় তাকেই পাঠায়।

এখন প্রশ্ন হলো সুইচ এ কাজটি কিভাবে করে? সুইচ তার সাথে সংযুক্ত প্রত্যেকটি আইসিটি যন্ত্রের একটি করে ঠিকানা বরাদ্দ করে এবং ঐ ঠিকানা অনুযায়ী উপাত্ত বা ডেটা পাঠাতে চাইলে সুইচ এক ঠিকানার তথ্য অন্য ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। এ বরাদ্দকৃত ঠিকানাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ভাষায় MAC Media Access Control Address নামে ডাকা হয়। আলাদা আলাদা ঠিকানা ব্যবহারের কারণে সুইআ হাবের চেয়ে অনেক দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারে। এজন্য নেটওয়ার্ক তৈরিতে সুইচই এখন সবার পছন্দ।

রাউটার (Router) :
Router শব্দটি এসেছে Route শব্দ থেকে রাইটার একটি গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র, যা হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে তৈরি। এটি নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয়। ইন্টারনেট অসংখ্য নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে তৈরি। একই প্রোটোকলের অধীনে কার্যরত দুটি নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করার জন্য রাউটার ব্যবহৃহ হয়। বর্তমানে ইন্টারনেটে অসংখ্য রাউটার রয়েছে।

রাউটার এর প্রধান কাজ ডেটা বা উপাত্তকে পথ নির্দেশনা দেওয়া। ধরুন অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থিত কোনো বন্ধুকে ই-মেইলের মাধ্যমে কেউ একটি ছবি পাঠাতে চায়। ছবিটি কয়েকটি ডেটা প্যাকেটে বিভক্ত হয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বন্ধুর কম্পিউটারে পৌঁছাবে। প্রতিটি ডেটা প্যাকেটে গন্তব্যস্থলের ঠিকানা সংযুক্ত থাকে। ইন্টারনেট যেহপতু জালের মতো গোটা পৃথিবী জুরে বিস্তৃত, তাই বিভিন্ন ডেটা প্যাকেট বিভিন্ন পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে। একটি ডেটা প্যাকেট কোনো একটি রাউটার-এ পৌঁছালে পরবর্তী কোন পথে অগ্রসর হলে ডেটা সহজে এবং দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাবে তার পথনির্দেশ দেয় ঐ রাউটার।

মডেম (Modem) :
ইন্টারনেটের মাধ্যমে নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র হলো Modem. Modulator- এর Mo এবং Demodulator হতে Dem এই অংশ দুটির সমন্বয়ে Modem শব্দটি তৈরি হয়েছে। মডেম তার দ্বারা সংযুক্ত বা তারবিহীন (wireless) প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হতে পারে।

ইন্টারনেটের মাধ্যমে ডেটা বা উপাত্ত পাঠানোর জন্য এক ধরণের সিগনাল দরকার হয়। মডেম এমন একটি নেটওয়ার্ক যন্ত্র (Network Device), যা কম্পিউটার হতে প্রাপ্ত ডিজিটাল সিগনালকে রুপান্তর করে Network কে প্রেরণ করে। আবার নেটওয়ার্ক হতে প্রাপ্ত সিগনালকে রুপান্তর করে কম্পিউটারে প্রেরণ করে।

পূর্বে স্বল্প গতির ডায়াল-আপ মডেম ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে এর পরিবর্তে দ্রুতগতির কেবল বা DSL (Digital Subscribers line) মডেম ব্যবহার হচ্ছে। এছাড়া বর্তমানে প্রচুর পরিমাণে Wi-Fi (Wireless Fidelity) মডেম ব্যবহৃত হচ্ছে।

ল্যান কার্ড (Lan Card) :
দুটো বা অধিকসংখ্যক কম্পিউটারকে একসাথে যুক্ত করতে যে যন্ত্রটি অবশ্যই প্রয়োজন হয়, তা হলো ল্যান কার্ড। অর্থাৎ আমরা যদি কোনো নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চাই, তবে অবশ্যই ল্যান কার্ডের প্রয়োজন হবে। নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত এক আইসিটি যন্ত্র থেকে অন্য যন্ত্রে কোনো তথ্য বা উপাত্ত পাঠাতে কিংবা গ্রহণ করতে ল্যান কার্ডের প্রয়জন হবে। এক্ষেত্রে ল্যান কার্ডের ভুমিকা ইন্টারপ্রেটারের মতো।

বর্তমানে পাওয়া যায় এমন প্রায় সব কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বা আইসিটি যন্ত্রের মাদারবোর্ডের সাথেই ল্যান কার্ড সংযুক্ত (Built-in) থাকে। তারপরও কিছু আইসিটি যন্ত্রে আলাদা করে ল্যান কার্ড সংযুক্ত করতে হয়। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে এখন তারবিহীন ল্যান কার্ড খুবই জনপ্রিয়।

Post a Comment

 
Top