আজকে আমরা কোনো প্রযুক্তি বা কোনো টিপস সম্পর্কে জানবোনা। আজকে আমরা জানবো মুসলিম বিজ্ঞানীদের কথা। একটা জিনিশ লক্ষ্য করবেন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী, গবেষক, আবিষ্কারকদের নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা হলেও মুসলিম বিশ্বের খ্যাতনামা বিজ্ঞানীদের নিয়ে আলোচনা কোথাও হয় না। সুকৌশলে তাদের সৃষ্টিশীল কর্মকে, গবেষণাকে ও আবিষ্কারকে আড়াল করে রাখা হয়। তাই আজ আমরা বিশ্ববরেণ্য কয়েকজন মুসলিম বিজ্ঞানী ও দার্শনিকদের কথা এবং তাদের কর্ম ও গবেষণা সম্পর্কে জানবো। নিচে আমি সারিবদ্ধভাবে মুসলিম বিজ্ঞানীদের নাম ও তাদের গবেষণাসহ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরলাম।
আল বিরুনি :
ভূপর্যটক হিসেবে পারস্যের এই মনীষী পরিচিত হলেও একই সাথে তিনি গণিত বিদ্যাকে একীভূত করে বলবিদ্যা নামক গবেষণা করে নতুন পথের প্রবর্তক হিসেবে তিনি স্বীকৃত। জীবনের বেশির ভাগ সময় গবেষণা কর্মে জীবন অতিবাহিত করেছেন।
ইবনে সিনা :
চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক বলে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তিনি ২১ বছর বয়সে ‘মুজমুয়া’ নামে একটি বিশ্বকোষ রচনা করেন। তিনি পদার্থবিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব, জ্যামিতি, গণিত ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ওপর প্রায় এক শ’ পুস্তক রচনা করেন। সকাল-সন্ধ্যায় প্রভুর দরবারে অজানাকে জানার জন্য ফরিয়াদ করতেন। যখনই গবেষণা কর্মে সমস্যায় পড়ে যেতেন মহান আল্লাহর সাহায্য চাইতেন। পরদিন ফজরের নামাজের পর সমস্যার সমাধান পেয়ে যেতেন।
মুসা আল খাওয়ারিজমি :
গণিতবিদ একই সাথে একজন জ্যোতির্বিদ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তিনি ছিলেন বীজগণিত বা এলজাব্রার জনক। অনুবাদক হিসেবে তিনি পরিচিত। পাটীগণিতের ওপর তার একটি বই ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ হয়েছে। তারপর বিশ্বব্যাপী তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে।
জাবির ইবনে হাইয়াম :
রসায়ন গবেষণার প্রতিষ্ঠাতা। তিনিই প্রথম বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে রসায়নের প্রাথমিক প্রক্রিয়াগুলো চর্চা করার উপায় আবিষ্কার করেন। তিনি প্রায় দুই হাজার পুস্তক রচনা করেন। রসায়ন ছাড়াও তিনি আলকেমিবিদ, জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষী, প্রকৌশলী, দার্শনিক, পদার্থবিজ্ঞানী এবং ঔষধ বিশারদ ও চিকিৎসক।
ওমর খৈয়াম :
তিনিই প্রথম উপবৃত্ত ও বৃত্তের ছেদকের সাহায্যে তৃঘাত সমীকরণের সমাধান করেন। তার রচিত, মালা কাতফি আল আজাব আল মুকাবিলা পুস্তক প্রকাশিত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কবি হিসেবে তিনি বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন।
আল ফারাবি :
পদার্থবিজ্ঞানে তিনিই প্রথম শূন্যতার অবস্থান প্রমাণ করেছিলেন। পদার্থবিজ্ঞান ছাড়াও তিনি সমাজবিজ্ঞান, দর্শন, যুক্তিশাস্ত্র, চিকিৎসাবিজ্ঞানে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন। বিশ্বব্যাপী দার্শনিক হিসেবে তার পরিচয় রয়েছে।
আল বাত্তানি :
জ্যোতির্বিদ হিসেবে তিনি পরিচিত। তিনিই প্রথম নির্ভুল পরিমাপ করে দেখিয়েছিলেন যে এক সৌরবছরে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৬ মিনিট ২৪ সেকেন্ড হয়। এই জ্যোতির্বিদ্যা গবেষণার জন্য তিনি প্রথম নিজস্ব উদ্যোগে মানমন্দির নির্মাণ করেন।
ইবনে হাইসাম :
তিনি একই সাথে পদার্থবিদ, জোতির্বিদ, প্রকৌশলী, গণিতবিদ, চিকিৎসাবিদ, দার্শনিক ও মনোবিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত। তিনি জ্যোতির্বিদ্যার ওপর একাধিক পুস্তক রচনা করেছেন।
আল রাজি :
সালফিউরিক এসিডের আবিষ্কারক। তিনি বিভিন্ন গবেষণামূলক ১৮৪টি পুস্তক রচনা করেছেন।
বানু মুসা :
পরিমাপক যন্ত্রের উৎকর্ষ সাধন করেছিলেন। ভিত্তি স্থাপনেও আধুনিক যন্ত্রের আবিষ্কার করেন।
আল বলখি :
জ্যোতির্বিদ, দার্শনিক, গণিতবিদ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত। একাধিক গবেষণামূলক পুস্তক রচনা করেছেন।
আল সাইগ :
জ্যোতির্বিদ, যুক্তিবিদ, দার্শনিক, পদার্থবিদ, মনোবিজ্ঞানী ও চিকিৎসাবিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত। এমনকি উদ্ভিদবিজ্ঞানী হিসেবেও তিনি পরিচিত।
আল-কিন্দি :
ভাষাবিদ ও ২৬৫টি পুস্তকের লেখক। ভাষাশাস্ত্র, গণিত শাস্ত্র, ফিকাহ শাস্ত্র গবেষক। ইতিহাস ও ধর্মীয় বিষয়ের ওপর মহান পণ্ডিত হিসেবে স্বীকৃত।
আল বেতরুগি :
দার্শনিক ও জ্যোতির্বিদ। স্নেহশিয়াল মোসন ও প্লেনটারি মোসন নিয়ে নিজস্ব মতবাদ প্রচার করেন।
ইবনুন নাফিজ :
মানবদেহের রক্তসঞ্চালন পদ্ধতি, শ্বাসনালী, ফুসফুসের সঠিক অবস্থান হৃৎপিণ্ড, শরীরের শিরা-উপশিরায় বায়ু ও রক্তের প্রবাহ সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে প্রথম অবহিত করেন।
এক নজরে সেরা যারা :
> রসায়নের জনক— জাবির ইবনে হাইয়ান
> বিশ্বের সেরা ভূগোলবিদ— আল-বিরুনি
> আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক— ইবনে সিনা
> হৃদযন্ত্রে রক্ত চলাচল আবিষ্কারক—ইবনুল নাফিস
> বীজগণিতের জনক— আল-খাওয়ারিজমি
> পদার্থ বিজ্ঞানে শূন্যের অবস্থান নির্ণয়কারী— আল-ফারাবি
> আলোক বিজ্ঞানের জনক— ইবনে আল-হাইসাম
> এনালিটিক্যাল জ্যামিতির জনক— ওমর খৈয়াম
> সাংকেতিক বার্তার পাঠোদ্ধারকারী— আল-কিন্দি
> গুটিবসন্ত আবিষ্কারক— আল-রাযী
> টলেমির মতবাদ ভ্রান্ত প্রমাণকারী —আল-বাত্তানি
> ত্রিকোণমিতির জনক — আবুল ওয়াফা
> স্টাটিক্সের প্রতিষ্ঠাতা — ছাবেত ইবনে কোরা
> পৃথিবীর আকার ও আয়তন নির্ধারণকারী—বানু মুসা
> মিল্কিওয়ের গঠন শনাক্তকারী — নাসিরুদ্দিন তুসি
> এলজাব্রায় প্রথম উচ্চতর পাওয়ার ব্যবহারকারী— আবু কামিল
> ল’ অব মোশনের পথ প্রদর্শক— ইবনে বাজ্জাহ
> ঘড়ির পেন্ডুলাম আবিষ্কারক — ইবনে ইউনূস
> পৃথিবীর ব্যাস নির্ণয়কারী— আল-ফরগানি
> পৃথিবীর প্রথম নির্ভুল মানচিত্র অঙ্কনকারী— আল-ইদ্রিসী
> বিশ্বের প্রথম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের আবিষ্কারক —আল-জাজারি
> সূর্যের সর্বোচ্চ উচ্চতার গতি প্রমাণকারী—আল-জারকালি
> বীজগণিতের প্রতীক উদ্ভাবক — আল-কালাসাদি
এক নজরে সেরা যারা :
> রসায়নের জনক— জাবির ইবনে হাইয়ান
> বিশ্বের সেরা ভূগোলবিদ— আল-বিরুনি
> আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক— ইবনে সিনা
> হৃদযন্ত্রে রক্ত চলাচল আবিষ্কারক—ইবনুল নাফিস
> বীজগণিতের জনক— আল-খাওয়ারিজমি
> পদার্থ বিজ্ঞানে শূন্যের অবস্থান নির্ণয়কারী— আল-ফারাবি
> আলোক বিজ্ঞানের জনক— ইবনে আল-হাইসাম
> এনালিটিক্যাল জ্যামিতির জনক— ওমর খৈয়াম
> সাংকেতিক বার্তার পাঠোদ্ধারকারী— আল-কিন্দি
> গুটিবসন্ত আবিষ্কারক— আল-রাযী
> টলেমির মতবাদ ভ্রান্ত প্রমাণকারী —আল-বাত্তানি
> ত্রিকোণমিতির জনক — আবুল ওয়াফা
> স্টাটিক্সের প্রতিষ্ঠাতা — ছাবেত ইবনে কোরা
> পৃথিবীর আকার ও আয়তন নির্ধারণকারী—বানু মুসা
> মিল্কিওয়ের গঠন শনাক্তকারী — নাসিরুদ্দিন তুসি
> এলজাব্রায় প্রথম উচ্চতর পাওয়ার ব্যবহারকারী— আবু কামিল
> ল’ অব মোশনের পথ প্রদর্শক— ইবনে বাজ্জাহ
> ঘড়ির পেন্ডুলাম আবিষ্কারক — ইবনে ইউনূস
> পৃথিবীর ব্যাস নির্ণয়কারী— আল-ফরগানি
> পৃথিবীর প্রথম নির্ভুল মানচিত্র অঙ্কনকারী— আল-ইদ্রিসী
> বিশ্বের প্রথম স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের আবিষ্কারক —আল-জাজারি
> সূর্যের সর্বোচ্চ উচ্চতার গতি প্রমাণকারী—আল-জারকালি
> বীজগণিতের প্রতীক উদ্ভাবক — আল-কালাসাদি
দুঃখজনক হলেও সত্যি, এই মহাবিজ্ঞানীদের নিয়ে বিশ্বের কোথাও আলোচনা হয় না। কারণ একটাই, এই বিজ্ঞানীরা মুসলমান। আমরা আশা করব, মুসলিম বিশ্ব এই মহাবিজ্ঞানীদের সৃষ্টিশীল গবেষণাকর্ম নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এদের হাত ধরে আমরা পৃথিবী থেকে সব অন্ধকার দূর করতে চাই। সেটা সম্ভব যদি গবেষণাকর্মে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতাকে প্রয়োগ করতে পারি। আর হ্যাঁ! আপনারা যদি এই বিজ্ঞানীদের সম্পর্কে আরো তথ্য জানতে চান, তাহলে উইকিপিডিয়াতে ভিজিট করে নাম লিখে সার্চ দিন এবং বিস্তারিত জেনে নিন।
Post a Comment